নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য: হৃদয়বিদারক বিদায়।

- আপডেট সময় : ০৬:৩৫:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
- / ৪৯২ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য এখন আর আমাদের মাঝে নেই। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারানো এই শিক্ষার্থীকে বুধবার (১৪ মে) রাতে নিজ গ্রাম সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সড়াতৈল কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয় মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত তার জানাজায় হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এলাকার মানুষ, সহপাঠী, স্বজন ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা ছুটে আসেন তাকে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে। গ্রামের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে কান্নার রোল আর শোকে স্তব্ধ স্বজনদের আহাজারিতে।
সাম্য ছিলেন পরিবারের সবার ছোট সন্তান, চার ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে আদরের। তার হঠাৎ চলে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা। তারা বাকরুদ্ধ, অসহায়, শোকে পাথর হয়ে আছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন সাম্য। থাকতেন এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে। একই হলের ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন তিনি।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় আরেকটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে সাম্যের। এ থেকেই শুরু হয় বাকবিতণ্ডা, যা পরে রূপ নেয় প্রাণঘাতী হামলায়। ছুরিকাঘাতের পর ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাতে ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে তিনজনকে—তামিম হাওলাদার, সম্রাট মল্লিক ও পলাশ সরদার—গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ, একজন মেধাবী ছাত্র, আর একটি পরিবারে স্বপ্ন যেন এক নিমিষেই নিভে গেল। সাম্যের অকাল মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হবার নয়।
শান্তিতে ঘুমাও সাম্য, তোমার স্বপ্নকে আমরা বাঁচিয়ে রাখব।